কবিতা- রাত পাহাড়ের কবিতা

রাত পাহাড়ের কবিতা
– সুনির্মল বসু

 

 

গভীর জ্যোৎস্না আলোকিত রাতে পাহাড় কথা বলে পাহাড়ের সাথে,

সবুজ অরণ্যানীর নীচে বয়ে যায় পাহাড়িয়া নদী, নদীর জলে চাঁদের ছায়া পড়ে নাকি,

বনফুলের গন্ধ বাতাসে সুরভি ছড়ায়,
দূরের আকাশ চুপি চুপি কথা কয়, বাতাসের ফিসফিসানি অরণ্য লোকে বয়ে যায়,
দূরের জনপদে আদিবাসী গ্রাম জেগে থাকে, কুপি জ্বালানো ঘরে মা শিশুকে রূপকথার গল্প শোনায়,
অভাব দারিদ্র দূরে যায়, কুঁড়েঘর যেন তখন স্বপ্নলোক, জীবনের যত ব্যথা দূর হোক্,
ঝর্ণার জলে জল নূপুরের শব্দ, দূরের বৃক্ষ শাখায়
অরণ্য পাখির ডানা ঝাপটানো বাংলো বাড়ি থেকে শোনা যায়,
গভীর রাতে পাহাড়িয়া গ্রাম ঘুমিয়ে কাদা,
আকাশ, চাঁদ, তারামণ্ডলী চেয়ে দ্যাখে জীবনের বিমূর্ত ছবি,
পাহাড়িয়া ঝরনার মতো, শান্ত নদীর মতো জীবন এখানে ধীরে প্রবাহিত,
লাল মাটির গন্ধ, সবুজের গান, ময়ূরের কর্কশ স্বর
মধ্যরাতে জেগে থাকে,
পরিশ্রমী মানুষ অকাতরে ঘুমায়, ক্লান্তি শরীর জুড়ে জেগে থাকে,
পাহাড়িয়া ঝরনা শান্ত নদী টিলা পাহাড় সারারাত কত কথা বলে,
নাগরিক কোলাহলের বাইরে এ এক অন্য জীবনের প্রতিভাস,

মানুষের অগোচরে থাকা এই জীবন প্রতিদিন নিঃশব্দ নীরবে রচনা করে জীবনের অন্য ক্যানভাস,
ভোর হতেই, জেগে ওঠে আদিবাসী মানুষ,
এভাবেই মানুষ বাঁচে, স্বপ্ন দ্যাখে, সন্তান পালন করে,
শুধুমাত্র বেঁচে থাকার জন্য শুরু হয় নতুন করে বেঁচে থাকার লড়াই,
গভীর রাতে এ পাহাড় ও পাহাড়ের সঙ্গে কথা বলে, ক্লান্ত মানুষ ঘুমায়, অরণ্য ঘুমায়, পাহাড় ঘুমায়,
রাতের তারা এবং চাঁদ মুগ্ধ দৃষ্টিতে সারারাত প্রকৃতির রূপ ও মানব মহিমা দেখে বিস্মিত হয়।

Loading

Leave A Comment